প্রবন্ধ- ” মানবিকতার ধ্রুবক “

” মানবিকতার ধ্রুবক “
– অমরেশ কুমার

 

কখনো কখনো অর্থের কাছে সামর্থ্যের পরাজয়, কখনো অর্থ মানুষ হতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়, কখনো প্রয়োজনে সেই অর্থ মানুষ চিনতে শেখায়।
আর যখন অর্থের কাছে সামর্থ্যের জয় হয় তখন চারিদিকে জয় জয়কার রব । ব্যাপারটা অনেকটাই শিক্ষা আর অশিক্ষার লড়াই, বলা যেতে পারে শিক্ষিত আর অশিক্ষিতর সংক্ষিপ্ত পরিচয় । কেননা গল্পের সারমর্ম তো সবার জানা-” ‘ওই যাবি?’ ‘কোথায় যাবেন বাবু’।

আরো গুছিয়ে বললে বলা যায় , শিক্ষাই শিক্ষিতের পরিচয় নয় , শিক্ষাই একমাত্র যোগ্য মানুষের নির্ধারক নয় , অশিক্ষিতও শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারে যদি মানবতাবোধ বজায় থাকে । তেমনি ধনকুবের হলেই লক্ষ্মীর বরপুত্ৰ হবে এমনটা নয়, গাধা ঘাড়ে করে লক্ষাধিক অর্থ বহন করা মানে অর্থের মালিক হয়ে যায় না । আর অর্থের মাধ্যমে মনুষ্যত্ব ক্রয় বিক্রয়ও করা যায় না ; হ্যাঁ , মানুষ কেনা যায় বটে তবে ‘বোধ’ কেনার মতো অর্থ সারাজীবন ধরে পরিশ্রম করলেও জমানো সম্ভবপর নয় , আর সে ‘বোধ’ যেদিন কিনতে পারবেন সেদিন অবশ্যই ‘বোধগম্য’ হবেন তার জন্য ধনকুবের হতে লাগে না । যার মনুষ্যত্ববোধ নেই তার কাছে অর্থ থেকে লাভ কি ? অর্থের পাহাড়ে বসে থেকেও গাধার মতো মাল বহন করছি মনে হওয়াটা অবাঞ্চিত নয় ।

শিক্ষিত বা অশিক্ষিত , ধনকুবের বা দিনমজুর যাই হোন না কেন এগুলির কোনোটিই আপনার পরিচয়ের চূড়ান্ত মাপকাঠি বলা বাঞ্ছনীয় নয় , মানুষের মানবিকতার ধ্রুবক নির্ধারিত হয় মনুষত্ববোধের উপর । এই ‘ধ্রুবক’ পেন্ডুলামের মতো দোদুল্যমান । কারো কাছে বোধগম্য কারো কাছে অবোধগম্য হয়ে কখনো সুগম কখনো দুর্গম হয়ে ওঠে ; সুগম হতে পারলেই প্রকাশ —- প্রকৃত মানুষের ।।

Loading

Leave A Comment